বাংলা অনুবাদ সহ সূরা ওয়াকিয়া
কুরআনের ৫৬তম সূরা, সূরা আল-ওয়াকিয়া (আরবি: سورة الواقعة) একটি গভীর মক্কার প্রত্যাদেশ যা বিচার দিবস (ইয়াওম আল-কিয়ামাহ) সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে। এর নাম, “অনিবার্য ঘটনা”, এই ঐশ্বরিক হিসাবের নিশ্চিততার উপর জোর দেয়।
শ্রেণী বিস্তারিত সূরার নাম আল-ওয়াকিয়াহ (الواقعة) – “অনিবার্য ঘটনা” অধ্যায় সংখ্যা 56 প্রকাশের স্থান মক্কা (মক্কী সূরা) জুজ নম্বর জুয’ ২৭ (১-৯৬ পদ জুড়ে) আয়াত সংখ্যা 96 রুকুস (অংশ) 3
সূরা আল ওয়াকিয়াহ এর বাংলা অনুবাদ
Verse 1
إِذَا وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ
যখন কিয়ামতের ঘটনা ঘটবে,
Verse 2
لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ
যার বাস্তবতায় কোন সংশয় নেই।
Verse 3
خَافِضَةٌ رَافِعَةٌ
এটা নীচু করে দেবে, সমুন্নত করে দেবে।
Verse 4
إِذَا رُجَّتِ الْأَرْضُ رَجًّا
যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী।
Verse 5
وَبُسَّتِ الْجِبَالُ بَسًّا
এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।
Verse 6
فَكَانَتْ هَبَاءً مُنْبَثًّا
অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা।
Verse 7
وَكُنْتُمْ أَزْوَاجًا ثَلَاثَةً
এবং তোমরা তিনভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে।
Verse 8
فَأَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ
যারা ডান দিকে, কত ভাগ্যবান তারা।
Verse 9
وَأَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ
এবং যারা বামদিকে, কত হতভাগা তারা।
Verse 10
وَالسَّابِقُونَ السَّابِقُونَ
অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই।
Verse 11
أُولَٰئِكَ الْمُقَرَّبُونَ
তারাই নৈকট্যশীল,
Verse 12
فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ
নেয়ামতের উদ্যানসমূহে,
Verse 13
ثُلَّةٌ مِنَ الْأَوَّلِينَ
তারা একদল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।
Verse 14
وَقَلِيلٌ مِنَ الْآخِرِينَ
এবং অল্পসংখ্যক পরবর্তীদের মধ্যে থেকে।
Verse 15
عَلَىٰ سُرُرٍ مَوْضُونَةٍ
স্বর্ণ খচিত সিংহাসন।
Verse 16
مُتَّكِئِينَ عَلَيْهَا مُتَقَابِلِينَ
তারা তাতে হেলান দিয়ে বসবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে।
Verse 17
يَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُخَلَّدُونَ
তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরেরা।
Verse 18
بِأَكْوَابٍ وَأَبَارِيقَ وَكَأْسٍ مِنْ مَعِينٍ
পানপাত্র কুঁজা ও খাঁটি সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতে নিয়ে,
Verse 19
لَا يُصَدَّعُونَ عَنْهَا وَلَا يُنْزِفُونَ
যা পান করলে তাদের শিরঃপীড়া হবে না এবং বিকারগ্রস্ত ও হবে না।
Verse 20
وَفَاكِهَةٍ مِمَّا يَتَخَيَّرُونَ
আর তাদের পছন্দমত ফল-মুল নিয়ে,
Verse 21
وَلَحْمِ طَيْرٍ مِمَّا يَشْتَهُونَ
এবং রুচিমত পাখীর মাংস নিয়ে।
Verse 22
وَحُورٌ عِينٌ
তথায় থাকবে আনতনয়না হুরগণ,
Verse 23
كَأَمْثَالِ اللُّؤْلُؤِ الْمَكْنُونِ
আবরণে রক্ষিত মোতির ন্যায়,
Verse 24
جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
তারা যা কিছু করত, তার পুরস্কারস্বরূপ।
Verse 25
لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا تَأْثِيمًا
তারা তথায় অবান্তর ও কোন খারাপ কথা শুনবে না।
Verse 26
إِلَّا قِيلًا سَلَامًا سَلَامًا
কিন্তু শুনবে সালাম আর সালাম।
Verse 27
وَأَصْحَابُ الْيَمِينِ مَا أَصْحَابُ الْيَمِينِ
যারা ডান দিকে থাকবে, তারা কত ভাগ্যবান।
Verse 28
فِي سِدْرٍ مَخْضُودٍ
তারা থাকবে কাঁটাবিহীন বদরিকা বৃক্ষে।
Verse 29
وَطَلْحٍ مَنْضُودٍ
এবং কাঁদি কাঁদি কলায়,
Verse 30
وَظِلٍّ مَمْدُودٍ
এবং দীর্ঘ ছায়ায়।
Verse 31
وَمَاءٍ مَسْكُوبٍ
এবং প্রবাহিত পানিতে,
Verse 32
وَفَاكِهَةٍ كَثِيرَةٍ
ও প্রচুর ফল-মূলে,
Verse 33
لَا مَقْطُوعَةٍ وَلَا مَمْنُوعَةٍ
যা শেষ হবার নয় এবং নিষিদ্ধ ও নয়,
Verse 34
وَفُرُشٍ مَرْفُوعَةٍ
আর থাকবে সমুন্নত শয্যায়।
Verse 35
إِنَّا أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً
আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি।
Verse 36
فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا
অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী।
Verse 37
عُرُبًا أَتْرَابًا
কামিনী, সমবয়স্কা।
Verse 38
لِأَصْحَابِ الْيَمِينِ
ডান দিকের লোকদের জন্যে।
Verse 39
ثُلَّةٌ مِنَ الْأَوَّلِينَ
তাদের একদল হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।
Verse 40
وَثُلَّةٌ مِنَ الْآخِرِينَ
এবং একদল পরবর্তীদের মধ্য থেকে।
Verse 41
وَأَصْحَابُ الشِّمَالِ مَا أَصْحَابُ الشِّمَالِ
বামপার্শ্বস্থ লোক, কত না হতভাগা তারা।
Verse 42
فِي سَمُومٍ وَحَمِيمٍ
তারা থাকবে প্রখর বাষ্পে এবং উত্তপ্ত পানিতে,
Verse 43
وَظِلٍّ مِنْ يَحْمُومٍ
এবং ধুম্রকুঞ্জের ছায়ায়।
Verse 44
لَا بَارِدٍ وَلَا كَرِيمٍ
যা শীতল নয় এবং আরামদায়কও নয়।
Verse 45
إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَٰلِكَ مُتْرَفِينَ
তারা ইতিপূর্বে স্বাচ্ছন্দ্যশীল ছিল।
Verse 46
وَكَانُوا يُصِرُّونَ عَلَى الْحِنْثِ الْعَظِيمِ
তারা সদাসর্বদা ঘোরতর পাপকর্মে ডুবে থাকত।
Verse 47
وَكَانُوا يَقُولُونَ أَئِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوثُونَ
তারা বলতঃ আমরা যখন মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি পুনরুত্থিত হব?
Verse 48
أَوَآبَاؤُنَا الْأَوْلُونَ
এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও!
Verse 49
قُلْ إِنَّ الْأَوَّلِينَ وَالْآخِرِينَ
বলুনঃ পূর্ববর্তী ও পরবর্তীগণ,
Verse 50
لَمَجْمُوعُونَ إِلَىٰ مِيقَاتِ يَوْمٍ مَعْلُومٍ
সবাই একত্রিত হবে এক নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে।
Verse 51
ثُمَّ إِنَّكُمْ أَيُّهَا الضَّالُّونَ الْمُكَذِّبُونَ
অতঃপর হে পথভ্রষ্ট, মিথ্যারোপকারীগণ।
Verse 52
لَآكِلُونَ مِنْ شَجَرٍ مِنْ زَقُّومٍ
তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষ থেকে,
Verse 53
فَمَالِئُونَ مِنْهَا الْبُطُونَ
অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে,
Verse 54
فَشَارِبُونَ عَلَيْهِ مِنَ الْحَمِيمِ
অতঃপর তার উপর পান করবে উত্তপ্ত পানি।
Verse 55
فَشَارِبُونَ شُرْبَ الْهِيمِ
পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়।
Verse 56
هَٰذَا نُزُلُهُمْ يَوْمَ الدِّينِ
কেয়ামতের দিন এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন।
Verse 57
نَحْنُ خَلَقْنَاكُمْ فَلَوْلَا تُصَدِّقُونَ
আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে। অতঃপর কেন তোমরা তা সত্য বলে বিশ্বাস কর না।
Verse 58
أَفَرَأَيْتُمْ مَا تُمْنُونَ
তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে।
Verse 59
أَأَنْتُمْ تَخْلُقُونَهُ أَمْ نَحْنُ الْخَالِقُونَ
তোমরা তাকে সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি?
Verse 60
نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ الْمَوْتَ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوقِينَ
আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই।
Verse 61
عَلَىٰ أَنْ نُبَدِّلَ أَمْثَالَكُمْ وَنُنْشِئَكُمْ فِي مَا لَا تَعْلَمُونَ
এ ব্যাপারে যে, তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের মত লোককে নিয়ে আসি এবং তোমাদেরকে এমন করে দেই, যা তোমরা জান না।
Verse 62
وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ النَّشْأَةَ الْأُولَىٰ فَلَوْلَا تَذَكَّرُونَ
তোমরা অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন?
Verse 63
أَفَرَأَيْتُمْ مَا تَحْرُثُونَ
তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
Verse 64
أَأَنْتُمْ تَزْرَعُونَهُ أَمْ نَحْنُ الزَّارِعُونَ
তোমরা তাকে উৎপন্ন কর, না আমি উৎপন্নকারী ?
Verse 65
لَوْ نَشَاءُ لَجَعَلْنَاهُ حُطَامًا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُونَ
আমি ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটা করে দিতে পারি, অতঃপর হয়ে যাবে তোমরা বিস্ময়াবিষ্ট।
Verse 66
إِنَّا لَمُغْرَمُونَ
বলবেঃ আমরা তো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম;
Verse 67
بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ
বরং আমরা হূত সর্বস্ব হয়ে পড়লাম।
Verse 68
أَفَرَأَيْتُمُ الْمَاءَ الَّذِي تَشْرَبُونَ
তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
Verse 69
أَأَنْتُمْ أَنْزَلْتُمُوهُ مِنَ الْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ الْمُنْزِلُونَ
তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি বর্ষন করি?
Verse 70
لَوْ نَشَاءُ جَعَلْنَاهُ أُجَاجًا فَلَوْلَا تَشْكُرُونَ
আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি, অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?
Verse 71
أَفَرَأَيْتُمُ النَّارَ الَّتِي تُورُونَ
তোমরা যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
Verse 72
أَأَنْتُمْ أَنْشَأْتُمْ شَجَرَتَهَا أَمْ نَحْنُ الْمُنْشِئُونَ
তোমরা কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি করেছ, না আমি সৃষ্টি করেছি ?
Verse 73
نَحْنُ جَعَلْنَاهَا تَذْكِرَةً وَمَتَاعًا لِلْمُقْوِينَ
আমি সেই বৃক্ষকে করেছি স্মরণিকা এবং মরুবাসীদের জন্য সামগ্রী।
Verse 74
فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ
অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
Verse 75
فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُومِ
অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি,
Verse 76
وَإِنَّهُ لَقَسَمٌ لَوْ تَعْلَمُونَ عَظِيمٌ
নিশ্চয় এটা এক মহা শপথ-যদি তোমরা জানতে।
Verse 77
إِنَّهُ لَقُرْآنٌ كَرِيمٌ
নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন,
Verse 78
فِي كِتَابٍ مَكْنُونٍ
যা আছে এক গোপন কিতাবে,
Verse 79
لَا يَمَسُّهُ إِلَّا الْمُطَهَّرُونَ
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।
Verse 80
تَنْزِيلٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ
এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
Verse 81
أَفَبِهَٰذَا الْحَدِيثِ أَنْتُمْ مُدْهِنُونَ
তবুও কি তোমরা এই বাণীর প্রতি শৈথিল্য পদর্শন করবে?
Verse 82
وَتَجْعَلُونَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُونَ
এবং একে মিথ্যা বলাকেই তোমরা তোমাদের ভূমিকায় পরিণত করবে?
Verse 83
فَلَوْلَا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ
অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়।
Verse 84
وَأَنْتُمْ حِينَئِذٍ تَنْظُرُونَ
এবং তোমরা তাকিয়ে থাক,
Verse 85
وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلَٰكِنْ لَا تُبْصِرُونَ
তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না।
Verse 86
فَلَوْلَا إِنْ كُنْتُمْ غَيْرَ مَدِينِينَ
যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়,
Verse 87
تَرْجِعُونَهَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ
তবে তোমরা এই আত্মাকে ফিরাও না কেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও ?
Verse 88
فَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِينَ
যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়;
Verse 89
فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّتُ نَعِيمٍ
তবে তার জন্যে আছে সুখ, উত্তম রিযিক এবং নেয়ামতে ভরা উদ্যান।
Verse 90
وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ
আর যদি সে ডান পার্শ্বস্থদের একজন হয়,
Verse 91
فَسَلَامٌ لَكَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ
তবে তাকে বলা হবেঃ তোমার জন্যে ডানপার্শ্বসস্থদের পক্ষ থেকে সালাম।
Verse 92
وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُكَذِّبِينَ الضَّالِّينَ
আর যদি সে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীদের একজন হয়,
Verse 93
فَنُزُلٌ مِنْ حَمِيمٍ
তবে তার আপ্যায়ন হবে উত্তপ্ত পানি দ্বারা।
Verse 94
وَتَصْلِيَةُ جَحِيمٍ
এবং সে নিক্ষিপ্ত হবে অগ্নিতে।
Verse 95
إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ حَقُّ الْيَقِينِ
এটা ধ্রুব সত্য।
Verse 96
فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ
অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
সূরা ওয়াকিয়া Mp3 ডাউনলোড
সূরা ওয়াকিয়া আরবি অডিওতে
আরবীতে সূরা ওয়াকিয়া + বাংলা অনুবাদ অডিও
সূরা ওয়াকিয়া ভিডিও
VIDEO
সূরা আল ওয়াকিয়াহ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ
কুরআনে অবস্থান: ৫৬তম সূরা, ৯৬টি আয়াত (মক্কা)।
মূল বিষয়বস্তু:
পরকালের অনিবার্যতা।
কর্মের ভিত্তিতে মানবজাতিকে তিনটি দলে ভাগ করা।
জান্নাত (জান্নাত) এবং জাহান্নামের (জাহান্নামের) বর্ণনা।
আল্লাহর শক্তির প্রমাণ হিসেবে তাঁর সৃষ্টির প্রতিফলন।
গঠন এবং তাৎপর্যপূর্ণ আয়াত
সূরাটি তিনটি ভাগে বিভক্ত:
ঘটনা এবং এর প্রভাব (আয়াত ১–৫৬)
কিয়ামতের দিনকে একটি অবশ্যম্ভাবী বাস্তবতা হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে:“যখন সেই ঘটনা সংঘটিত হবে, তখন তার সংঘটন অস্বীকার করার কেউ থাকবে না।” (সূরা আল-ওয়াকিয়া ৫৬:১-২, সহীহ ইন্টারন্যাশনাল অনুবাদ)
মানবজাতিকে তিনটি দলে ভাগ করা হয়েছে:
সাবিকুন (অগ্রণী): যারা সর্বপ্রথম বিশ্বাস এনেছে, তারা চিরন্তন শান্তি ও সুখ লাভ করবে (আয়াত ১০–২৬)
ডানপক্ষের সঙ্গী: যারা সৎকর্মশীল, তারা উদ্যান ও সন্তুষ্টির সঙ্গে পুরস্কৃত হবে (আয়াত ২৭–৪০)
বামপক্ষের সঙ্গী: যারা অবিশ্বাসী, তারা জাহান্নামে দণ্ডিত হবে (আয়াত ৪১–৫৬)
আল্লাহর শক্তির প্রমাণ (আয়াত ৫৭–৭৪)
সৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব তুলে ধরা হয়েছে:“তোমরা কি চিন্তা করো না, যা তোমরা নির্গত করো—তোমরা কি একে সৃষ্টি করো, না আমরাই স্রষ্টা?” (৫৬:৫৮–৫৯)
উদ্ভিদ, পানি ও আগুন—এই সবই তাঁর করুণা ও কুদরতের নিদর্শন।
কুরআনের পবিত্রতা এবং চিন্তা করার আহ্বান (আয়াত ৭৫–৯৬)
কুরআনের ঐশী উৎস জোর দিয়ে বলা হয়েছে:“নিশ্চয়ই এটি এক মর্যাদাপূর্ণ কুরআন, যা সংরক্ষিত কিতাবে রয়েছে; কেবল পবিত্ররাই একে স্পর্শ করতে পারে।” (৫৬:৭৭–৭৯)
শেষে আল্লাহর নাম মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণার তাগিদ (আয়াত ৯৬)।
মূল থিম এবং বার্তা
আখিরাতের নিশ্চিততা: এই সূরা পুনরুত্থান সম্পর্কে সকল সন্দেহ দূর করে এবং সৎকর্মের মাধ্যমে প্রস্তুতির আহ্বান জানায়।
আল্লাহর ন্যায়বিচার: পুরস্কার ও শাস্তি মানুষের ঈমান ও কর্ম অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
কৃতজ্ঞতা: প্রকৃতির অপূর্ব নিদর্শন পর্যবেক্ষণ মানুষকে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ হতে উদ্বুদ্ধ করে।
নম্রতা: মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় যে, তারা আল্লাহর রিজিক ও অনুগ্রহের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল।
উপসংহার
সূরা আল-ওয়াকিয়া জীবনের চূড়ান্ত উদ্দেশ্যের এক চিরন্তন স্মারক: আল্লাহর ইবাদত করা এবং পরকালের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। এর প্রাণবন্ত চিত্রকল্প এবং যুক্তিসঙ্গত যুক্তি বিশ্বাসী এবং অন্বেষী উভয়কেই অস্তিত্ব, ন্যায়বিচার এবং ঐশ্বরিক করুণার উপর চিন্তা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
সান্তনা, নির্দেশনা বা আশীর্বাদের জন্য পাঠ করা হোক না কেন, এই সূরা পার্থিব এবং চিরন্তন সেতুবন্ধন করে, মানবতাকে উদ্দেশ্য এবং কৃতজ্ঞতার সাথে বেঁচে থাকার আহ্বান জানায়।
আজই সূরা আল-ওয়াকিয়া অন্বেষণ করুন – এর অনুবাদ পড়ুন, এর আয়াতগুলি চিন্তা করুন এবং এর প্রজ্ঞা আপনার হৃদয়কে রূপান্তরিত করতে দিন।